দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত ও নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম! আজকে আমাদের সকলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত, দুরুদে ইব্রাহিম বাংলায়, ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ, নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম, দুরুদ পড়ার নিষিদ্ধ সময় ও দুরুদ শরীফ কখন পড়তে হয়।
আজকের পোস্টটি আমাদের সকলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই পোস্টটি পড়লে আপনি দুরুদে ইব্রাহিম আরবি, দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা উচ্চারণ, দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত, Durood Sharif Bangla, Durood Ibrahim Bangla, নবীর উপর দুরুদ ও সালাম, সবগুলো দুরুদ শরীফ বাংলা, ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ।

ছোট দুরুদ শরীফ pdf, সবগুলো দুরুদ শরীফ pdf, কোন দুরুদ পড়া উত্তম, দুরুদে ইব্রাহিম তেলাওয়াত, দুরুদ পড়ার নিষিদ্ধ সময়, দুরুদ শরীফ কখন পড়তে হয় ও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেন। তাই এই সকল তথ্য জানার জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

পেইজ কন্টেন্ট সূচিপত্রঃ দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত - নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম - ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ

দুরুদ শরীফ ইব্রাহিম - দুরুদে ইব্রাহিম আরবি

প্রিয় পাঠক, সবচেয়ে উত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহিম। আর এই দুরুদে ইব্রাহিম যেটা নামাজের মধ্যে পড়তে হয়। নিচে দুরুদে ইব্রাহিম আরবি দেওয়া হলোঃ

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

দুরুদে ইব্রাহিম বাংলায় (Durood ibrahim bangla)

দুরুদে ইব্রাহিম বাংলায় (Durood Sharif Bangla), দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা উচ্চারণ নিচে দেওয়া হলোঃ

“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদউঁ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিউঁ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।”

দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা অর্থ

প্রিয় পাঠক, এতোক্ষুণ দুরুদে ইব্রাহিম আরবি, দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা উচ্চারণ করা হয়েছে। তাই এখন দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা অর্থ কি, তা এখানে তুলে ধরবো। তাই দুরুদে ইব্রাহিম এর বাংলা অর্থ নিচে দেওয়া হলোঃ

“হে আল্লাহ! আপনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমন আপনি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।”

দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত

স্বয়ং মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন মাজিদে নবী কারীম (সাঃ) এর জন্য দুরুদ পাঠ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তথা আল্লাহর দরবারে তাঁর জন্য দোয়া করার আদেশ করেছেন।

এটি একদিকে যেমন মহান আল্লাহর কাছে তাঁর রাসূল (সাঃ) এর মর্যাদার প্রমাণ করে, তেমনি মুমিন বান্দার রহমত ও বরকত লাভের অন্যতম উপায়। আর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে পাওয়ার একমাত্র পথ হলো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অনুসরণ করা।
প্রিয় পাঠক, দুরুদে ইব্রাহিম তেলাওয়াত বা দুরুদে ইব্রাহিম দোয়া পড়া খুব উত্তম। দুরুদে ইব্রাহিম এর ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার আরেকটি পোস্টে বিস্তারিত দেওয়া আছে। তাই দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত সম্পর্কে জানার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।

নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম

নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম বা নবীর উপর দুরুদ ও সালাম কিভাবে পড়বেন তা এখন এই পোস্টে আলোচনা করা হবে। দুরুদ হলো মুহাম্মদ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি সালত তথা দোয়া করা। আল্লাহর কাছে রাসূল (রাঃ) ও তাঁর পরিবারের প্রতি দোয়া করা। রাসূল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পড়া অনেক সম্মান ও মর্যাদার ইবাদত।

নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) স্বয়ং সব নিয়ম বলে দিয়েছেন। তাই নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে কিছু হাদিস আমি এখন তুলে ধরবো। তাই এই সকল বিষয় গুলো সঠিক ভাবে জানার জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

হাদিসে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি বেশি বেশি সালাত ও সালাম পাঠ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবু লাইলা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) এর উপর কিভাবে দুরুদ পড়তে হবে, সেই সম্পর্কে রাসূল (সাঃ) স্বয়ং বলে দিয়েছেন। রাসূল (সাঃ) বললেন তোমরা এভাবে পড় - 

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেমন আপনি হযরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয় আপনি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।” (সহিহ বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

দুরুদ পাঠ করা সওয়াব ও ইসলামি শরিয়তের একটি বড় মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত। রাসূল (সাঃ) এর প্রতি সালাত তথা দুরুদ পড়ার অর্থ হলো - আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর রাসূল (সাঃ) কে অতিশয় সম্মানিত ও গৌরবান্বিত করা। আর এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং কুরআনুল কারিমে দুরুদ পড়েন এবং অন্যদেরকে দুরুদ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا

অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ (ঊর্ধ্ব জগতে ফেরেশতাদের মধ্যে) নবীর (সালাত) প্রশংসা করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর জন্য  (সালাত) দোয়া করে।” (সূরা আহজাব, আয়াত” ৫৬)

এই আয়াতের সাথে একটি হাদিস সংযুক্ত আছে। মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন - 

إِنَّ لِلَّهِ مَلاَئِكَةً سَيَّاحِيْنَ فيِ الأرْضِ يُبَلِّغُونِي مِنْ أُمَّتِي السَّلاَمَ

অর্থঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীতে এমন অনেক ভ্রমণকারী ফেরেশতা মন্ডলী নির্ধারিত রয়েছেন, যাঁরা আমার প্রতি আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাল পোঁছিয়ে দেন। (সুনান নাসায়ী, হাঃ ৩৩৭০)

আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর প্রতি অধিকরত সালাম প্রেরণ করার নিয়মটি হলোঃ

اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ
অর্থঃ “হে নবী! আপনার প্রতি সমস্ত শান্তি, আল্লাহর করুণা ও তাঁর কল্যাণ অবতীর্ণ হোক।” পাঠ করা।

অথবা, اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ
অর্থঃ “হে আল্লাহর রাসূল! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার শান্তি অবতীর্ণ হোক।” এই বলে আল্লাহর রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করা।

অথবা, اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ يَا نَبِيَّ اللهِ
অর্থ” হে আল্লাহর নবী! আপনার প্রতি সর্ব প্রকার  শান্তি অবতীর্ণ হোক।” এই বলে রাসূল (সাঃ) এর প্রতি সালাম পেশ করা উচতি।

নবীর উপর দুরুদ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য আমার আরেকটি পোস্ট আছে। সেই পোস্টটি পড়ার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন।

নামাজের দুরুদ শরীফ

নামাজের দুরুদ শরীফ হলো দুরুদে ইব্রাহিম। সকল নামাজে দুরুদে ইব্রাহিম পড়তে হয়। রাসূল (সাঃ) তাঁর উম্মতের উপর এর একটি অধিকার ও প্রাপ্য হলো - তাঁর উম্মতের প্রতিটি মানুষ যেন তাঁর প্রতি সালাম করে। তাই নামাজের শেষ বৈঠকে প্রত্যেক মুসলিম নবীর প্রতি দুরুদ পাঠায়।
প্রিয় পাঠক, তাই আমাদের মুমিন মুসলমানদের উচিত, নামাজ ছাড়াও রাসূল (সাঃ) এর প্রতি বেশি বেশি দুরুদ পাঠ করা। কেননা এই দুরুদ দোয়া কবুল ও কাজের বরকতের অন্যতম উপাদান।

ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ - ছোট দুরুদ শরীফ pdf

ছোট দুরুদ শরীফ pdf, ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ, সবগুলো দুরুদ শরীফ pdf, সব গুলো দুরুদ শরীফ বাংলা, কোন দুরুদ পড়া উত্তম। এই পোস্টটি পড়লে আপনি সব জানতে পারবেন। প্রিয় পাঠক, আজকে আমি কয়েকটি ছোট দুরুদ শরীফ নিয়ে আলোচনা করবো ইনশায়াল্লাহ। তাই অনলাইফ আইটি এর সাথেই থাকুন।

সবচেয়ে ছোট দুরুদ শরীফ হলো ঃ 

صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
অর্থঃ “আল্লাহ তাঁর (মুহাম্মদের) প্রতি সালাত (দয়া) ও সালাম (শান্তি) বর্ষণ করুন।”

ছোট দুরুদ শরীফের বাংলা উচ্চারণঃ

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ (আল্লাহুম্মা সল্লি আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ।)
 অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের উপর রহমত বর্ষণ করুন।”

ছোট দুরুদ শরীফের বাংলা উচ্চারণঃ

اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ   (আল্লাহুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আলা নাবিয়্যিনা মুহাম্মাদ।)
 অর্থঃ “হে আল্লাহ! আপনি নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন।”

ছোট দুরুদ শরীফের বাংলা উচ্চারণঃ

صَلَّى اللّٰهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ  (সাল্লাল্লহু আলান্নাবিয়্যি মুহাম্মাদ।
অর্থঃ “নবী মুহাম্মদের উপর রহমত বর্ষণ করুন।”

প্রত্যেক নামাজে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর শান্তি প্রার্থনা করে দুরুদ শরীফ পাঠ করতে হয়। আর দুরুদ শরীফ পাঠ করা ছাড়া নামাজ সম্পন্ন হয় না। দুরুদ হচ্চে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট রাসূল (সাঃ) এর জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির জন্য দোয়া করা।

তাই আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলিম উম্মাহকে নবী কারিম (সাঃ) এর প্রতি বেশি বেমি দুরুদ পাঠ করার তৌফিক  দান করুন। (আমিন)

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আজকের আলোচনায় দুরুদে ইব্রাহিম আরবি, দুরুদে ইব্রাহিম বাংলা উচ্চারণ, দুরুদে ইব্রাহিম অর্থ, নামাজের দুরুদ শরীফ, দুরুদে ইব্রাহিম ফজিলত, নবীর উপর দুরুদ পড়ার নিয়ম ও ছোট ছোট দুরুদ শরীফ সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

দুরুদ শরীফ পড়ার উপকারিতা, দুরুদ শরীফ পড়ার নিষিদ্ধ সময় ও দুরুদ শরীফ পড়ার সঠিক সময় কখন তা নিয়ে আরেকটি পোস্ট লিখবো।

আশা করি, আজকের এই পোস্টটি আপনার অনেক কাজে লাগবে। আর পরবর্তীতে এই রকম আরো জানতে চাইলে অনলাইফ আইটি এর সাথেই থাকুন। আর এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে দয়াকরে এই পোষ্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়া শেয়ার করুন, যাতে অন্যেরাও পড়ে উপকৃত হতে পারে। (শওকত রাশেল)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়ানলাইফ আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url