তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - ইমান ও আকাইদ

প্রাথমিক বিদ্যালয় - তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা
প্রথম অধ্যায় - ইমান ও আকাইদ (পার্ট-০১)

শিখনকাল

আসসালামু আলাইকুম! প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজকে তোমাদের জন্য তৃতীয় শ্রেণি এর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয় থেকে প্রথম অধ্যায় - ইমান ও আকাইদ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে আলোচানা করবো ইনশায়াল্লাহ। তাই আজকের এই পোস্টটি যদি তোমরা ভালো ভাবে পড়ো, তাহলে এখান থেকে অনেক কিছু জানতে ও সহজেই বুঝতে পারবে।

আজকের এই অধ্যায় পড়ে তোমরা জানতে পারবে

পাঠ - পরিচিতি

মহান আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি সব কিছু জানেন, দেখেন ও শোনেন। তিনি পথ ভোলা মানুষকে সঠিক পথ প্রদর্শণের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। সর্ব প্রথম নবী হযরত আদম (আঃ)। আর সর্বশেষ নবী ও রাসূল হলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। 

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে পথ দেখানোর জন্য ১০৪ খানা আসমানি কিতাব প্রেরণ করেছেন। তার মধ্যে ৪ খানা বড় কিতাব এবং ১০০ খানা ছোট কিতাব। ছোট কিতাবকে সহিফা বলা হয়। আমাদের দুনিয়ার জীবন হলো ইহকাল। আর মৃত্যুর পরের জীবন হলো পরকাল বা আখিরাত।

আমাদের ইমানের মূল কথা হলো কালিমা তায়্যিবা। এর প্রথম অংশ দ্বারা তাওহীদ ও আল্লাহ’র একাত্ববাদের ঘোষণা দেওয়া হয়। আর দ্বিতীয় অংশ দ্বারা ঘোষণা দেওয়া হয় রিসালতের।

এই অধ্যায়ের বিষয় ভিত্তিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নত্তোর


নিচের প্রশ্ন গুলোর সংক্ষেপে উত্তর দাও

আল্লাহ তায়ালার চারটি গুণের নাম লিখ।

উত্তরঃ আল্লাহ তায়ালার চারটি গুণের নাম হলোঃ-
(ক) আল্লাহু খালিকুন – অর্থ আল্লাহ স্রষ্টা  
(খ) আল্লাহু রাব্বুন – অর্থ আল্লাহ পালনকারী
(গ) আল্লাহু রাজ্জাকুন – অর্থ আল্লাহ রিজিকদাতা
(ঘ) আল্লাহু রাহমান – অর্থ আল্লাহ দয়ালু।

মহান আল্লাহ তায়ালার পাঁচটি সৃষ্টির নাম লিখ।

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালার পাঁচটি নাম হলোঃ-
(ক) মানুষ
(খ) ফেরেশতা
(গ) পাহাড়-পর্বত
(ঘ) নদী-নালা
(ঙ) পশুপাখি

ইমান কাকে বলে?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয়। তিনিই একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্ত। হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। এই সব মনে প্রাণে বিশ্বাস করাকে ইমান বলে।

‘আল্লাহু খালিকুন’ অর্থ কি?

উত্তরঃ ‘আল্লাহু খালিকুন’ আরবি শব্দ। এর বাংলা অর্থ হলো আল্লাহ স্রষ্টা।

‘রাজ্জাক’ শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ ‘রাজ্জাক’ শব্দের অর্থ রিজিকদাতা।

‘রব’ শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ ‘রব’ শব্দের অর্থ পালনকারী।

আল্লহ তায়ালা আমাদের কিভাবে লালনপালন করেন?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর অসংখ্য নিয়ামত দিয়ে লালনপালন করেন।

মহান আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম হলো ‘আল্লাহু রাব্বুন’, অর্থ - আল্লাহ পালনকারী। আমাদের জীবন যাপনের সকল উপকরণও তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি আলো, বাতাস, পানি দিয়ে আমাদের লালনপালন করেন।

আমাদের খাবারের জন্য তিনি নানা রকম ফল, ফসল, শাকসবজি এবং বিভিন্ন রকম প্রাণী, যেমন- গরু, ছাগল, হাস-মুরগী, মাছ প্রভৃতি সৃষ্টি করেছেন। এই সব খেয়ে আমরা বেঁচে থাকি। এই ভাবে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের লালনপালন করেন।

আল্লাহ তায়ালা শিশুর জন্য কি ব্যবস্থা করেছেন?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালা শিশুর জন্য তার মায়ের বুকে দুধের ব্যবস্থা করেছেন। এটি শিশুর জন্য খুব পুষ্টিকর ও রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য। মায়ের দুধে পানি, চিনি, ফিডার এই সবের কোন কিছুই লাগে না। তৈরি করার কোন ঝামেলাও নেই। মায়ের দুধের সাথে কোন খাদ্যের তুলনা হয় না।

‘রাব্বুল আলামিন’ অর্থ কি?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালা শুধু আমাদেরই রব নন। তিনি হচ্ছেন ‘রাব্বুল আলামিন’। ‘রাব্বুল আলামিন’ শব্দের অর্থ হলো সকল সৃষ্টির পালনকারী। অর্থাৎ তিনি মানুষসহ সৃষ্টি জগতের সকল সৃষ্টির এককভাবে পালনকর্তা। তাই আমরা মহান আল্লাহকে পালনকারী হিসেবে বিশ্বাস করবো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।

গাছপাল ও শাকসবজি কি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে?

উত্তরঃ গাছপালা ও শাকসবজি আলো-বাতাস ও মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে। গাছপালা সূর্যের আলো থেকে শক্তি এবং বাতাস থেকে কার্ব-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে। আর মাটি থেকে পানি ও খনিজ লবণ নেয়।

আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন কেন?

উত্তরঃ মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন কেবল তাঁর ইবাদত করার জন্য।

মহান আল্লাহ মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি অন্য সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। মানুষকে তিনি ভালো-মন্দ বুঝার জন্য জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেক দিয়েছেন। সুতরাং মহান আল্লাহর এতসব নিয়ামত লাভের জন্য মানুষের উচিত কেবল তাঁরই ইবাদত করা এবং তাঁর হুকুম আহকাম পালন করা।

আমাদের নবীর নাম নিলে কি বলতে হয়?

উত্তরঃ আমাদের নবীর নাম নিলে ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ বলতে হয়।

আমাদের নবীর নাম হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। মহান আল্লাহ প্রেরিত নবী-রাসূল গণের মধ্যে আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হলেন সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ট নবী ও রাসূল। তাই নবীকে সম্মান দেখানোর জন্য নবীর নাম নিলে কৃতজ্ঞতাসরুপ বলতে হয় ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। সুতরাং আমরা যতোবারই নবীর নাম নিব এবং শুনবো, ততোবারই তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো।

শেষ কথা

শেষ কথা হিসেবে বলতে চাই, আজকে তৃতীয় শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা - ইমান ও আকাইদ অধ্যায় থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভিত্তিক প্রশ্নত্তোর নিয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি, বুঝতে পেরেছ। আজকের লিখা আর বাড়াচ্ছিনা, পর্যায়ক্রমে আমি আবারও তোমাদের মাঝে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো ইনশায়াল্লাহ।

প্রিয় শিক্ষাথীরা, শেষ কথা হিসেবে বলতে চাই, আজকের এই পোস্টটি পড়ে যদি তোমাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি তোমাদের স্যোসাল মিডিয়া বা ফেসবুকে শেয়ার করে দাও। যাতে অন্যেরাও পড়ে উপকৃত হতে পারে। এতোক্ষণ সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। (শওকত রাশেল)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ওয়ানলাইফ আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url