শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? কোন বাবা-মা ই চান না যে, তার সন্তান খাবারে অরুচি, পড়ালেখা ও অন্যান্য কাজে অনীহা বা ঝিমিয়ে যাক। এটা কোন  বাবা-মা ই কাম্য করেন না। তবে বর্তমান সময়ে এটাই হয়ে যাচ্ছে। একটু ভাবেন তো এর জন্য কে দায়ী?
হুম! আমাদের বর্তমান খাবার ব্যবস্থা ই হচ্ছে এর প্রধান কারণ। বর্তমান খাবার ব্যবস্থা এর জন্য দায়ী। প্রতিনিয়ত বাচ্চারা বাজারের অস্বাস্থ্যকর ও কেমিক্যাল যুক্ত খাবারের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এইসব খাবার খেলে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশে বাধাগ্রস্থ করে। তাই শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা জানতে হবে।

পেইজ কন্টেন্ট সূচিপত্রঃ

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস তৈরির গুরুত্ব

একটি দেশের নাগরিকের ৫টি মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে খাদ্য হচ্ছে অন্যতম। বর্তমান সময়ের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক কর্মসূচি হচ্ছে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য বিশ্বে ১৬ অক্টোবর খাদ্য দিবস পালন করা হয়।

প্রতিটি বাবা-মা কে জিজ্ঞেস করলেই জানা যায় যে, শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা কতটা কঠিন। বিশেষ করে শিশুরা যারা স্কুলে যায়, তারা পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে বাজারের অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি খুব সহজেই  আকৃষ্ট হয়। এটা শিশুর শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশের জন্য খুব ক্ষতিকর।

শিশুরা যেন পুষ্টিকর খাবার পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। স্কুলগামী শিশুরা যেন স্কুলে বা বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার পায়, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে হবে। তাই আপনাকে শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা জানতে হবে।

আপনার শিশুর শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। এইসব উপাদান সমৃদ্ধ খাবার আপনার শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যপক ভাবে সাহায্য করবে। তাই শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় থেকেই শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাসের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুকে ছোট বেলা থেকেই সুষম খ্যাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্থ করতে হবে। প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। তাহলেই শিশুর শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে।
শিশুর শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশে শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন নিচে সেই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। তাই আপনি শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা জানতে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

বাসায় তৈরি খাবারে অভ্যস্ত করা

বর্তমান সময়ে অনেক বাবা-মা বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে তাদের সন্তানকে কেমিক্যালযুক্ত বাজারের প্রক্রিয়াজাত খাবার দিয়ে থাকেন। যা শিশুর সু-স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনার শিশুকে বাজারের প্রক্রিয়াজাত খাবার না দিয়ে বাসায় তৈরি খাবারের প্রতি অভ্যস্ত করতে হবে। এজন্য শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা জানার জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ফল ও সবজি জাতীয় খাবারে অভ্যস্ত করা

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? বিভিন্ন ফলমূল, শাক-সবজি ও আঁশযুক্ত শাক-সবজি হচ্ছে পুষ্টির একটি অন্যতম উৎস। এই সব খাবার শিশুর শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনেক শিশুই এই সব ফলমূল ও সবজি জাতীয় খাবার পছন্দ করে না। তাই আপনার শিশু যেন এই সব খাবার গ্রহণ করে, সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বিভিন্ন রং এর ফলের প্রতি উৎসাহিত করা

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? বিভিন্ন রং এর ফল ও সবজির প্রতি আপনার শিশুকে উৎসাহিত করতে হবে। কারণ এই সব ফলমূল ও সবজি শিশুর রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই আপনার শিশুকে আপেল, কলা, কমলা, আঙ্গুর, বেদানা, খেজুর, বাদাম এই সব ফল খাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। কারণ, এই সব ফল অনেক পুষ্টিকর।

শস্যজাতীয় খাবারের প্রতি উৎসাহিত করা

চলুন আরো দেখি শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? শিশুর বেড়ে উঠা, মেধা বিকাশ ও নতুন কিছু শেখার জন্য শক্তির প্রয়োজন। এই শক্তি পাওয়া যায় বিভিন্ন শস্যজাতীয় খাবার থেকে। যেমন- ভাত, ওটস, পাস্তা, বার্লি। এই সব শস্যজাতীয় খাবার শিশুর পেট দীর্ঘ সময় ভরা থাকে। এই সব খাবার গ্রহণের ফলে বাচ্চা দীর্ঘ সময় সক্রিয় ও উদ্যমী থাকে। তাই আপনার শিশুকে শস্য জাতীয় খাবার এর প্রতি উৎসাহিত করতে হবে।

দুগ্ধজাত খাবারের প্রতি উৎসাহিত করা

প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম এর একটি বড় উৎস হচ্ছে দুগ্ধজাত খাবার। যেমন- দুধ, পনির, দই ইত্যাদি। এই সব খাবার আপনার শিশুর জন্য একটি আদর্শ খাবার। তাই আপনার শিশুকে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন আশা করি বুঝতে পারছেন।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের প্রতি উৎসাহিত করা

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দিয়ে শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন চলুন তা জেনে নিই। শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- মাছ, মাংশ, ডিম, মটরশুঁটি, মসুর ডাল ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। এছাড়াও এই সব খাবারে আয়রণ, বিভিন্ন ভিটামিন যেমন ভিটামিন বি-১২ ও খনিজ উপাদান আছে।
শিশুদেরকে দীর্ঘ একটা সময় স্কুলে থাকতে হয়। তাই এই সময় টিফিনের জন্য শিশুকে প্রোটিন জাতীয় খাবার দিতে হবে। কারণ, শিশুদের মেধা বিকাশ ও শেখার জন্য মাছের তেল ও চর্বিহীন লাল মাংশ বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। 

পানি খেতে উৎসাহিত করা

শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন? এজন্য আপনার শিশুকে পর্যাপ্ত পানি পান করতে উৎসাহিত করতে হবে। বাজারের জুস না দিয়ে বাসায় কম চিনি দিয়ে ফলের জুস বানিয়ে দিন। এটা শিশুর জন্য বেশ উপযোগী।

অতিরিক্ত লবণ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার বর্জন করা

অতিরিক্ত লবণ ও মিষ্টি জাতীয় খাবার শিশুর অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। এই সব খাবার ডায়াবেটিস রোগ বহন করতে সহায়তা করে। তাই যেসব খাবারে প্রচুর লবণ ও চিনি থাকে, সেই সব খাবার আপনার শিশুকে দেওয়া বর্জন করতে হবে। শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন আশা করি বুঝতে পারছেন।

শেষ কথা

শেষ কথা হিসেবে একটি কথায় বলতে চাই, শিশুর শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশে স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা শিশুর একার উপর চাপিয়ে দিলে তা সম্ভব নয়। পরিবারের সবাই স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন, তাহলে আপনার শিশুও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উৎসাহিত হবে। তাই শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হলে পুরো পরিবারের মাঝে স্বাস্থকর খ্যাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

আশা করি, শিশুর স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস কিভাবে তৈরি করবেন তা বুঝতে পেরেছেন। আমাদের এই পোস্ট টি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা শেয়ার করুন, যাতে অন্যেরাও পড়ে  উপকৃত হতে পারে। আর এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। SR-101
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url